করোনাভাইরাসে বয়স্কদের তুলনায় শিশুরা কম আক্রান্ত হলেও তাদেরও ঝুঁকি রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভাইরাস আক্রান্ত এক-তৃতীয়াংশ শিশুর শরীরে সেভাবে কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। তাই সতর্ক থাকাটাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি জরুরি।
রোগের উপসর্গ
সাধারণ শিশুরা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে জ্বর, শুকনো কাশি, গলা ব্যথা, মাথা যন্ত্রণা, বমি ভাব, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগে।
শিশুদের শরীরে যেভাবে ভাইরাস প্রবেশ করে
শিশুদের সংক্রমণ সাধারণত দুভাবে হয়ে থাকে–
১.করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শ থেকে রোগ ছড়াতে পারে। আবার করোনা রয়েছে এমন জায়গায় ঘুরে আসার পরও এই রোগ সংক্রমণ হতে পারে।
২.আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে হাঁচি, কাশির মধ্যে দিয়ে নির্গত থুতুর ড্রপলেট অথবা কোনো সারফেস থেকে আসা ভাইরাস হাতের মাধ্যমে চোখ, নাক,মুখ দিয়ে শিশুদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
শিশুদের থেকে কীভাবে রোগ ছড়াতে পারে?
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রায় ২৮ শতাংশের যেহেতু কোনো লক্ষণ সেভাবে দেখা যায় না। তাই বাড়ির অন্যরা মনে করেন তাদের সন্তান সুস্থ রয়েছে। বিশেষ করে বয়স্কদের মধ্যে তারা রোগ সংক্রমিত করতে থাকে। তাই অল্প লক্ষণ রয়েছে এমন শিশুরাও হাঁচি-কাশি ও হাতের মাধ্যমে অন্যদের রোগ সংক্রমিত করতে পারে।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, শতকরা ২৯ শতাংশ করোনা আক্রান্ত শিশুর মলের নমুনায় এই ভাইরাস এর অস্তিত্ব মিলেছে। তাই শিশুরা মলের মাধ্যমেও রোগজীবাণু ছড়াতে পারে।
শিশুর ফ্লু হলে কী করবেন-
১.শিশুদের ফ্লু হলে তাদের ব্যবহৃত সব বাসনপত্র ও গামছা আলাদা করুন। দু’দিন পর খেয়াল করুন শিশুর কোনো রকম শ্বাসের সমস্যা হচ্ছে কি না। শ্বাসকষ্টের সমস্যা হলে করোনা পরীক্ষা করাতে হবে।
২.টেস্ট পজিটিভ হলে ভয় না পেয়ে তাকে কোয়ারেন্টিনে রেখে সুস্থ করে তোলার কাজে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে সহযোগিতা করুন।
৩.সাধারণ ফ্লু হলে শিশুদের কয়েকদিন পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে আলাদা রাখতে হবে।যে ব্যক্তি শিশুর যত্ন নেবেন তিনি মাস্ক ব্যবহার ও ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নেবেন।
৪.বাড়ির বয়স্কদের থেকে শিশুদের দূরে রাখতে হবে।
৫.শৌচাগার ব্যবহারের পরে শিশুকে ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত ধোয়াতে হবে।
৬. শিশু যেন চোখ-নাক-মুখে হাত না দেয়, সে দিকে খেয়াল রাখুন।
৭. শিশুদের শাকসবজি ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে।এছাড়া পরিমাণমতো পানিও পান করাতে হবে। ৮.শিশু ঠিকমতো ঘুমাচ্ছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখুন। ভাল করে ঘুমোলে শিশুর ইমিউনিটি বৃদ্ধি পাবে ও রোগের সঙ্গে তারা লড়তে পারবে।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা